Close Menu

    Subscribe to Updates

    Get the latest creative news from FooBar about art, design and business.

    What's Hot

    প্যানক্রিয়াটাইটিস ডায়েট: কী খাবেন যদি প্যানক্রিয়াটাইটিস হয়।

    কখন খাব তা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

    ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোম

    Facebook X (Twitter) Instagram
    পুষ্টি আপা
    • Home
    • খবর
    • রোগ-ব্যাধি
    • প্রাকৃতিক জীবন
    • মানিসিক স্বাস্থ্য
    অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং
    পুষ্টি আপা
    You are at:Home»খবর»কলেস্টেরল, শত্রু তো নয়-ই, বরং বন্ধু

    কলেস্টেরল, শত্রু তো নয়-ই, বরং বন্ধু

    September 12, 201810 Mins Read2 Views
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Pinterest WhatsApp Email

    কলেস্টেরল ও হৃদরোগ সম্পর্কে প্রচলিত ধারণা এখন পুরোনো হয়ে গেছে। নতুন গবেষণা বলছে, কলেস্টেরল হৃদরোগের কারণ নয়, বরং একটি লক্ষণমাত্র। এমনকি কারো কারো ক্ষেত্রে খারাপ কলেস্টেরল হিসেবে পরিচিত লো-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিনের উচ্চমাত্রাও আর খারাপ কোনো বিষয় নয়, যদি তিনি ফ্যাটসমৃদ্ধ ও কমমাত্রার শর্করা জাতীয় খাবারে অভ্যস্ত হন। এতদিন যাবৎ লিপিড, এলডিএল, ভিএলডিএল, এইচডিএল, ভালো কলেস্টেরল, খারাপ কলেস্টেরল এবং এদের কাজ সম্পর্কে মেডিক্যাল ও ফার্মাসিউটিক্যাল স্কুলগুলোতে যা পড়ানো হতো তা সম্ভবত ভুল এবং অবশ্যই অসম্পূর্ণ। ইমফ্লামেশনের কারণে ধমনির প্রাচীরে ক্ষত সৃষ্টি হয়, যা একসময় হৃদরোগের সৃষ্টি করে। কলেস্টেরল আসলে একটি রিপেয়ার মলিকিউল বা মেরামত অণু, যা ক্ষতস্থানে এসে ক্ষত সারানোর চেষ্টা করে। তাই কলেস্টেরল সম্পর্কে সচেতন হওয়ার আগে ইমফ্লামেশন সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।

    জানি আমার কথাগুলো খুব কানে বাজছে। কারণ, আমাদের কান এসব কথা শুনে অভ্যস্ত নয়। এ কথাগুলো আমার নয়। তবে যার তিনি নিজেও একজন মেডিক্যাল প্রফেশনাল নন; তিনি একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার; নাম ডেভ ফেল্ডম্যান। এই ভদ্রলোকই প্রথম বললেন যে, লিপিড প্রোফাইলকে এতদিন যেভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে তা ঠিক নয়।

    ফেল্ডম্যান তার নাদুসনুদুস শরীরটা থেকে মেদ ঝরাবার জন্য কিটোজেনিক ডায়েট শুরু করেছিলেন। কিটোজেনিক ডায়েট হলো খাবারে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ খুব স্বল্পমাত্রায় রেখে ভালো ফ্যাটের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়া এবং সেই সাথে মধ্যমানের প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার রাখা। দুরারোগ্য মৃগী রোগের চিকিৎসায় এটি একটি সফল খাদ্যব্যবস্থা। এই ডায়েটটি অনুসরণ করে তিনি খুব ভালো অনুভব করেছিলেন, যা তিনি এর আগে কখনোই করেননি। কিছুদিন পর যখন তিনি কলেস্টেরল স্টাডি করলেন তিনি দেখলেন রক্তে তার কলেস্টেরলের মাত্রা ৩২৯ মিলি মোল/লিটার এবং এলডিএল কলেস্টেরলের (তথাকথিত খারাপ কলেস্টেরল) মাত্রা ২৬০ মিলি মোল/লিটার। অথচ সাধারণ গাইডলাইন অনুযায়ী রক্তে কলেস্টেরলের মাত্রা ২০০-এর নিচে এবং এলডিএল-এর মাত্রা ১০০-এর নিচে থাকা আবশ্যক। এমন পরিস্থিতিতে যেকোনো ডাক্তার তাকে স্ট্যাটিন দেবেন। স্ট্যাটিন মূলত শরীরে কলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে ব্যবহার করা হয়। এটি শরীরে নতুন কলেস্টেরল তৈরি করতে বাধা প্রদান করে। তবে এর অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। একজন চিকিৎসক শুধু তখন স্ট্যাটিন প্রেসক্রাইব করেন, যখন তিনি মনে করেন রোগীটির অদূর ভবিষ্যতে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি আছে। যাই হোক, নিজের লিপিড স্টাডি দেখে ফেল্ডম্যান মোটামুটি ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলেন। কিটোডায়েট অনুসরণ করে তিনি বেশ কিছু ওজন ঝরিয়েছিলেন। তার অন্যান্য স্বাস্থ্য লক্ষণগুলোও বেশ ভালো ছিল। আর সবচেয়ে বড় কথা, তিনি খুব ভালো বোধ করা শুরু করেছিলেন, যা তিনি ইতিপূর্বে কখনো করেননি। অথচ তার কলেস্টেরল স্টাডি কেন খারাপ এলো তা নিয়ে তিনি অনুসন্ধান শুরু করলেন।

    তিনি তার পরবর্তী কয়েক বছর কলেস্টেরল সিস্টেম নিয়ে পড়াশোনা শুরু করলেন এবং লো-কার্ব ডায়েট কীভাবে তার কলেস্টেরল স্টাডিতে ভূমিকা রাখছে সে বিষয়ে ব্যক্তিগত ডাটা সংগ্রহে ব্যস্ত থাকলেন। সেই সাথে তিনি তার ডাটাগুলো নিজের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা শুরু করলেন। তিনি দেখলেন একে একে ৫০ জন মানুষ তাদের নিজ নিজ ডাটা ফেল্ডম্যানের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। সেসব ডাটা থেকে সহজেই বোঝা যায় যে, কলেস্টেরল নিয়ে অনেক ভুল বোঝাবুঝি আছে। বিশেষ করে যারা লো-কার্ব ও হাই ফ্যাট খাবার খান তাদের ক্ষেত্রে কলেস্টেরল স্টাডি একদম অন্য রকম। তার ওয়েবসাইটে পাওয়া ডাটাগুলো বিশ্লেষণ করে ফেল্ডম্যান উপসংহার টানলেন যে, কলেস্টেরল নয়, বরং ইনফ্লামেশনকে আমাদের দোষ দেওয়া উচিত। আর এভাবেই তিনি কলেস্টেরল সম্পর্কিত পুরো প্যারাডাইমকে শিফট করে ফেললেন।

    আমাদের খাদ্য তালিকা যখন শর্করাপ্রধান হয় তখন আমাদের শরীর অধিকাংশ শক্তি গ্লুকোজ থেকে গ্রহণ করে। আমরা শর্করা খাই, এগুলো পাকস্থলী ও অন্ত্রে পাচিত হয়ে গ্লুকোজে পরিণত হয়। তারপর অন্ত্রের প্রাচীর দ্বারা শোষিত হয়ে গ্লুকোজ রক্তস্রোতে মেশে এবং সেখান থেকে বিভিন্ন ক্ষুধার্ত কোষে চলে যায়। তবে কোষে প্রবেশের জন্য সাধারণত এদের ইনসুলিনের সাহায্য প্রয়োজন হয়। আমাদের রক্ত মূলত জলীয়। চিনির এই জলীয় অংশের সাথে মিশে যেতে কোনো সমস্যাই হয় না। ঠিক যেমন এক গ্লাস পানিতে এক চামচ গ্লুকোজ অনায়াসে মিশে যায়।

    অন্যদিকে আমাদের খাদ্যতালিকা যখন চর্বিপ্রধান হয়, তখন আমাদের শরীর অধিকাংশ শক্তি চর্বি থেকে নেবে। এ ক্ষেত্রে চর্বি জাতীয় খাবার পরিপাকতন্ত্রে পাচিত হয়ে ফ্যাটি এসিড তৈরি করে। সমস্যা হচ্ছে, এই ফ্যাটি এসিড সরাসরি রক্তস্রোতে মিশে যেতে পারে না। কারণ, চর্বি জাতীয় পদার্থ জলীয় দ্রাবকে মিশে যেতে পারে না। এক গ্লাস পানিতে এক ফোঁটা তেল দিলে যা হবে ঠিক তেমনটাই ঘটবে এখানে, অর্থাৎ ওই তেল রক্তস্রোতে প্রবাহিত না হয়ে বরং রক্তনালির প্রাচীরের সাথে আটকে থাকবে। কিন্তু শক্তির একটি অন্যতম উৎস এই ফ্যাটকে সামলাবার মতো বুদ্ধিমত্তা মানবদেহের আছে। ফ্যাটকে কোষে কোষে পৌঁছে দেবার জন্য আমাদের শরীর দুটি কাজ করে।

    প্রথমত, এটি তিনটি করে ফ্যাটি এসিড নিয়ে একটি বান্ডিল তৈরি করে, যাকে ট্রাইগ্লিসারাইড বলা হয় এবং যা ফ্যাটি এসিড অপেক্ষা সহজভাবে পরিবহন করা যায়।

    দ্বিতীয়ত, শরীর এই ট্রাইগ্লিসারাইড বহনের জন্য কিছু নৌকা তৈরি করে, যাদের আমরা লিপোপ্রোটিন বলি। লিপোপ্রোটিন লিপিড ও প্রোটিন-সহযোগে তৈরি বলে এটি লিপিড অংশ দিয়ে ফ্যাটি এসিডকে ধরে রাখে এবং প্রোটিন অংশ দিয়ে সহজেই জলীয় রক্তে ভ্রমণ করতে পারে।

    এখন এই লিপোপ্রোটিন যখন পরিপূর্ণভাবে ট্রাইগ্লিসারাইড বহন করে তখন এদের ভেরি লো ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন বা ভিএলডিএল বলে। আর এই ভিএলডিএল যখন কিছু ট্রাইগ্লিসারাইড কোনো কাজে ফেলে দেয় তখন এদের লো ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন বা এলডিএল বলে।

    হ্যাঁ, আপনি ঠিকই পড়ছেন, এলডিএল যাকে সাধারণত আমরা খারাপ কলেস্টেরল বলি, আসলে এটি কলেস্টেরল নয়, বরং এটি প্রোটিনের তৈরি একটি বাহন, যেখানে অন্যান্য প্রয়োজনীয় চর্বি জাতীয় পদার্থের সাথে কলেস্টেরল একটি যাত্রী মাত্র।

    কলেস্টেরলও শরীরের প্রয়োজনে এলডিএল নামক নৌকায় যাত্রা করে। আর প্রয়োজন না হলে এটি নৌকা থেকে নামে না। যখন শরীরে ইমার্জেন্সি অবস্থার সৃষ্টি হয়, শুধু তখন কলেস্টেরল যকৃৎ দ্বারা উৎপাদিত হয়ে এলডিএল নৌকায় ইমার্জেন্সি স্পট অভিমুখে যাত্রা করে। কারণ, কলেস্টেরলের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে কোষের মেরামত করা।

    আর এলডিএল-এর মূল কাজ হলো কোষে চর্বি জাতীয় শক্তি উৎপাদনকারী পদার্থ সরবরাহ করা। তাই যখন কেউ চর্বিপ্রধান খাবার খাবে তখন তার শরীরে এলডিএল-এর মাত্রা বেড়ে যাবেই, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। বরং এসব ক্ষেত্রে এলডিএল ভালো বলেই গণ্য হওয়া উচিত। কারণ অনেক ফ্যাটি এসিড অপেক্ষা করছে আর এদের কোষে বহন করে নিয়ে যেতে এলডিএল প্রয়োজন। আর যদি আপনি সুস্থ হন, কোথাও কোনো কোষে মেরামতের প্রয়োজন না পড়ে তবে এলডিএল কর্তৃক বহনকৃত কলেস্টেরল হাই ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন (এইচডিএল)-এর মধ্যে বোঝাই হয়ে যকৃতে ফিরে আসে এবং সেক্স হরমোন বা বাইল সল্ট তৈরির কাজে বা অন্য কোনো কাজে ব্যবহৃত হয়। এ কারণে চর্বিসমৃদ্ধ খাবার টেস্টোস্টেরনের মাত্রাা বৃদ্ধি করে।

    এতেই আমরা বুঝতে পারছি আমাদের শরীর কতটা ধীশক্তিসম্পন্ন। শরীর সমস্ত চর্বি জাতীয় পদার্থের জন্য কুরিয়ার সার্ভিসের ব্যবস্থা করেছে এবং যেগুলো কাজে লাগছে না বা উদ্বৃত্ত থেকে যাচ্ছে, তাদের আবার সে রিসাইকেল করছে। তাই যখন শরীর শর্করাপ্রধান খাবার না খেয়ে বরং চর্বি প্রধান খাবার গ্রহণ করছে তখন তার শরীরে কলেস্টেরলসহ অন্যান্য চর্বি জাতীয় পদার্থের আনাগোনাও বেড়ে যাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে কলেস্টেরল টেস্টে বেশি মাত্রার ফলাফল আসছে। এখন, শরীরে যদি কোথাও কোনো কোষীয় ক্ষত না থাকে, অর্থাৎ কোনো মেরামতের প্রয়োজন না পড়ে তবে মেরামতের জন্য সিমেন্টসদৃশ কলেস্টেরল ব্যবহৃত না হয়ে বরং তা অন্য কোনো জরুরি কাজ করার জন্য প্রস্তুত হয়।

    আমাদের একটা সাধারণ ভ্রান্ত ধারণা আছে যে, ধমনির ভেতরের প্রাচীরে কলেস্টেরল জমা হয়ে ধমনিতে ব্লক সৃষ্টি করে অনেকটা গ্রিজের কারণে, যেভাবে পানির পাইপে ব্লক তৈরি হয়। কিন্তু বিষয়টি আসলে এতটা সরল নয়। এখানে অনেক সূক্ষ্ম জিনিস আছে, যা ভেবে দেখা আবশ্যক।

    আমরা আগেই জেনেছি যে, কলেস্টেরল আসলে একটি মেরামত অণু, যা ক্ষতিগ্রস্ত কোষে গিয়ে জমা হয় তাকে সারিয়ে তোলার অভিপ্রায়ে। অর্থাৎ কলেস্টেরল যায় ক্ষত সারাতে। আমাদের শরীরের মোট ওজনের ২ শতাংশ হলো আমাদের মস্তিষ্ক। অথচ আমাদের শরীরের মোট কলেস্টেরলের ২০ শতাংশ আছে মস্তিষ্কে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমাদের মস্তিষ্কের সাথে শরীরের বাকি অংশের যে বিভেদ প্রাচীর আছে, যাকে ব্লাড-ব্রেইন-বেরিয়ার বলা হয়, কলেস্টেরল সে প্রাচীর ভেদ করতে পারে না বলে মস্তিষ্ক নিজেই তার কলেস্টেরল বানিয়ে নেয়। এতেই বুঝতে পারি কলেস্টেরল আমাদের মস্তিষ্কের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

    সমস্যা হচ্ছে, যে এলডিএল পার্টিকেলগুলো কলেস্টেরল বহন করে, তারা এত বড় যে সহজেই ধমনির প্রাচীরের ছিঁড়ে যাওয়া ক্ষতস্থানে আটকে যায়। আর এখান থেকেই প্ল্যাক তৈরি হওয়া শুরু হয়।

    তাই প্ল্যাককে প্রতিরোধ করার জন্য যদি এলডিএল কলেস্টেরল কমিয়ে দেই, তবে শরীর মেরামত অণু থেকে বঞ্চিত হবে কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হবে না। বরং যারা রক্তনালির ভেতরের প্রাচীরে ক্ষত সৃষ্টির জন্য দায়ী, তাদের দেহের ভেতরে প্রবেশ বন্ধ করতে হবে। অর্থাৎ এলডিএল একটি অজানা সমস্যার লক্ষণ, কোনোভাবেই কারণ না। তাহলে, স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন এসে যায় যে, কী সেই কারণ যা রক্তনালিতে ক্ষত সৃষ্টি করছে।

    ধারণা করা হচ্ছে যে মূলত ইনফ্লামেশন রক্তনালিতে ক্ষত সৃষ্টির জন্য দায়ী। বিষয়টি একটি উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যেতে পারে। ধূমপানের কারণে শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বাড়ে। অক্সিডেটিভ স্ট্রেস হলো ফ্রি র‌্যাডিক্যাল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মধ্যে ভারসাম্যহীনতা। ফ্রি র‌্যাডিক্যাল হলো অক্সিজেন-বিশিষ্ট অণু, যাদের বেজোড়সংখ্যক ইলেকট্রন আছে এবং যারা খুব সহজেই শরীরের অন্যান্য অণুর সাথে বিক্রিয়া করে সেখানে পরিবর্তন ঘটায়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হলো সেসব অণু, যারা এসব ফ্রি র‌্যাডিক্যালকে একটি ইলেকট্রন দান করেও নিজেরা স্ট্যাবল থাকতে পারে আর ইলেকট্রন গ্রহণ করে ফ্রি র‌্যাডিক্যালও স্ট্যাবল হয়।

    এখন অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বেড়ে যাওয়া মানে ফ্রি র‌্যাডিক্যাল বেড়ে যাওয়া, যেগুলো রক্তনালির এন্ডোথেলিয়াল সেলে ক্ষত সৃষ্টি করে। এই ক্ষতিগ্রস্ত সেলগুলো তখন শরীরের জন্য একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। শরীর তখন এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ক্ষতস্থানে মেরামত কর্ম চালায়। আর তা করতে গিয়ে সেখানে কলেস্টেরল, ফ্যাট, বিভিন্ন প্রতিরক্ষা কোষ, ক্যালসিয়ামসহ আরো কিছু পদার্থ ক্ষতস্থানে জমা হয়ে প্ল্যাকের সৃষ্টি হয়। রক্তনালির প্রাচীরে গর্ত থাকা অপেক্ষা ওখানে একদলা কাদার মতো পদার্থ আটকিয়ে রাখাকে শরীর অপেক্ষাকৃত শ্রেয় মনে করে।

    সুতরাং, আমরা বুঝতে পারছি, কলেস্টেরলের দেহাভিমুখী গমন একটি বড় সমস্যার ইঙ্গিত। কিন্তু, তার মানে এই নয় যে কলেস্টেরলই সেই সমস্যার কারণ।

    এখন পর্যন্ত হার্ট ডিজিজের রিস্ক ফ্যাক্টর খোঁজার ওপর যে গবেষণাগুলো হয়েছে তার মধ্যে ফ্রামিংহাম হার্ট স্টাডি উল্লেখযোগ্য। এই স্টাডিটি শুরু হয়েছিল ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে, যেখানে কয়েক প্রজন্ম ধরে হৃদরোগের বিভিন্ন ডাটা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এই স্টাডি থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে হৃদরোগের প্রধান রিস্ক ফ্যাক্টরগুলো হলোÑ

    ১.    অধিক কলেস্টেরল এবং রক্তনালি ব্লক,

    ২.    স্মোকিং,

    ৩.    স্থূলতা,

    ৪.    শারীরিক পরিশ্রম না করা,

    ৫.    উচ্চ রক্তচাপ,

    ৬.    মানসিক চাপ।

    বিষয় হচ্ছে, কলেস্টেরল ছাড়া উপরের সব ফ্যাক্টরই ইনফ্লামেশনের জন্য দায়ী। অর্থাৎ এই ফ্যাক্টরগুলো ইনফ্লামেশন সৃষ্টি করে আর ইনফ্লামেশনের কারণে রক্তনালির প্রাচীর ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

    প্ল্যাক হলো ইনফ্লামেটরি জীবনযাপনের ফলাফল। অর্থাৎ যে ধরনের জীবনযাপন শরীরে ইনফ্লামেশন সৃষ্টি করে তা দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকলে ইনফ্লামেশন রক্তনালির প্রাচীরকে ছিঁড়ে ফেলে। কলেস্টেরল তখন সেখানে গিয়ে সেই ছেঁড়া অংশ মেরামত করে এবং ছেঁড়া স্থানে স্তূপ হয়ে থেকে রক্তপ্রবাহে বাধার সৃষ্টি করে। তখন যা কিছু ঘটে গিন্নি বলে কলেস্টেরল ব্যাটাই দায়ী। কারণ, সে রাস্তা রোধ করে বে-আক্কেলের মতো জমা হয়ে আছে।

    তবে ইনফ্লামেশনই যে প্রধান আসামি তা এখন অনেকেই অনুধাবন করছেন। গবেষকরা নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন যে, কোনগুলো আসলে রোগের কারণ আর কোনগুলো লক্ষণ। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ডেভ ফেল্ডম্যান এখন কলেস্টেরল মাস্টার হিসেবে অনেকের কাছেই সমাদৃত।

    ইনফ্লামেশন কমানোর উপায়

    যদিও ইনফ্লামেশনের আদ্যোপান্ত বের করতে এখনো অনেক কাজ বাকি তথাপি অস্বাস্থ্যকর খাবার, স্থূলতা, স্মোকিং, শারীরিক শ্রম না করা এবং মানসিক চাপ যে ইনফ্লামেশন সৃষ্টি করে তাতে আর সন্দেহের অবকাশ নেই। নিচের পাঁচটি উপায়ে আমরা ইনফ্লামেশন কমাতে পারি এবং আমাদের হার্টকে রক্ষা করতে পারি।

    ১.    চিনি বর্জন এবং কম শর্করা গ্রহণ : সবার আগে চিনি বাদ দিতে হবে আর সেই সাথে অতিরিক্ত শর্করা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। সেই জায়গায় স্বাস্থ্যকর খাবার, যেমনÑআন-অক্সিডাইজ্ড ফ্যাট, ভালো প্রোটিন এবং প্রচুর সবুজ শাক-সবজি খেতে হবে। এতে শরীরে নিউট্রিশনাল কিটোসিস কাজ করা শুরু করবে। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া ডেভিস-এর প্রফেসর স্টিভ ফিনি তার দীর্ঘ গবেষণাকাজে একাধিকবার প্রমাণ করেন যে, কম মাত্রায় কার্ব গ্রহণ শরীরে অনেকগুলো ইনফ্লামেশন মার্কারের মাত্রা কমিয়ে দেয়। এছাড়া বেশ কিছু মেটা-এনালাইসিস থেকে দেখা যায় যে, চিনি গ্রহণ শরীরে ইনফ্লামেশন তৈরির প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। এর জন্য দায়ী করা হয় অতিরিক্ত চিনি থেকে যকৃতে ফ্রি ফ্যাটি এসিড তৈরি প্রক্রিয়াকে। কারণ, লিপোটক্সিসিটির সূত্রানুসারে এ সময় তৈরি হওয়া বিভিন্ন ফ্রি ফ্যাটি এসিড মেটাবলাইটস ইনফ্লামেশনকে উদ্দীপিত করে এবং সেই সাথে প্রচুর রি-অ্যাকটিভ অক্সিজেন স্পেসিস তৈরি করে।

    ২.    পলিফেলন খেতে হবে : বিভিন্ন রঙিন ফলমূল ও শাক-সবজি খেতে হবে। এসবে আছে পলিফেলন যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কাজ করে। ফলে ইনফ্লামেশনকে প্রতিরোধ করা যায়। কারণ এরা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। তাই প্রতিদিন রংধনু খাবার গ্রহণ করতে হবে।

    ৩.    নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম : শারীরিক পরিশ্রমে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস দূর হয় বলে ইনফ্লামেশন সৃষ্টির সুযোগ পায় না।

    ৪.    মেডিটেশন করা : মেডিটেশন বা ধ্যানমগ্ন হয়ে প্রার্থনা মানসিক চাপ কমায়, যার ফলে অক্সিডেটিভ ড্যামেজ ও ইনফ্লামেশন কমে।

    ৫.    স্ট্রেস কমানো : যে ঘটনাগুলো আমাদের মধ্যে স্ট্রেস তৈরি করে তা হয়তো আমরা এড়িয়ে যেতে পারি না, তবে সেই ঘটনাগুলোর বিপরীতে আমাদের প্রতিক্রিয়াকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করতে পারি। ইয়োগা, হালকা শারীরিক পরিশ্রম, বন্ধুদের সাথে আড্ডা, প্রার্থনা প্রভৃতি স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

    ৬.    ঘুম : একটি গভীর ঘুম এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।

    ৭.    অন্ত্রের অণুজীব : আমাদের অন্ত্রে বসবাসকারী অণুজীব যাতে আমাদের অনুকূলে কাজ করে সে বিষয়ে সচেষ্ট হওয়া জরুরি।

    Book Pusty Apa
    magazine seo soledad
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Reddit WhatsApp Telegram Email
    Previous Articleপানি পান নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হোক
    Next Article মহামারি রোগ ডায়াবেটিস

    Related Posts

    প্যানক্রিয়াটাইটিস ডায়েট: কী খাবেন যদি প্যানক্রিয়াটাইটিস হয়।

    March 31, 2025

    কম অক্সালেটযুক্ত খাবার: কিডনী পাথর রোগীর জন্য প্রযোজ্য।

    September 20, 2024

    ফেরিটিন এবং চুল পড়ার মধ্যে সম্পর্ক

    August 22, 2024
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Book Pusty Apa
    Top Posts

    ফেরিটিন এবং চুল পড়ার মধ্যে সম্পর্ক

    August 22, 202441 Views

    কম অক্সালেটযুক্ত খাবার: কিডনী পাথর রোগীর জন্য প্রযোজ্য।

    September 20, 202418 Views

    শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেলে কি হতে পারে?

    August 16, 202416 Views

    মাইক্রোসাইটিক, হাইপোক্রোমিক অ্যানিমিয়া

    August 15, 202416 Views
    Don't Miss
    খবর March 31, 20258 Views

    প্যানক্রিয়াটাইটিস ডায়েট: কী খাবেন যদি প্যানক্রিয়াটাইটিস হয়।

    প্যানক্রিয়াটাইটিস হল প্যানক্রিয়াসের প্রদাহ যা তীব্র এককালীন বা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। ৮০% ক্ষেত্রে অ্যালকোহল…

    কখন খাব তা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

    ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোম

    আনসাং হিরো ‘ম্যাগনিজিয়াম’

    ফলো করুন !
    • Facebook
    • Twitter
    • Instagram
    • YouTube
    Book Pusty Apa
    পুষ্টি আপা
    Facebook X (Twitter) Instagram YouTube
    • অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং
    • আমাদের সম্পর্কে
    • যোগাযোগ
    • গোপনীয়তা নীতি
    © 2025 পুষ্টি আপা - সকল অধিকার সংরক্ষিত। কারিগরি সহযোগিতায়ঃ অভিনব আইটি

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.