ম্যাগনিজিয়াম শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ইলেকট্রোলাইট অর্থাৎ এটি রক্তে থাকাকালীন কিছু ইলেকট্রিক চার্জ বহন করে। বেশির ভাগ ম্যাগনিজিয়ামই অস্থিতে সঞ্চিত থাকে। এই মিনারেলটি আমাদের শরীরে ৩২৫টির বেশি বায়োকেমিক্যাল রিঅ্যাকশনের সাথে জড়িত, যেখানে এটি মূলত এনজাইমের কো-ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। এর অভাব হৃদকম্পন থেকে শুরু করে মাংসপেশি পর্যন্ত প্রতিটি জায়গায় এমনকি হরমোনের কাজে পর্যন্ত প্রভাব ফেলে। আমেরিকান কলিজ অব নিউট্রিশন-এর জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্র দাবি করে স্ট্যাটিন সেবন এবং রক্তে ম্যাগনিজিয়ামের স্বাভাবিক মাত্রায় উপস্থিতি উভয়ে একই রকম রক্ত জমাট বাঁধা রোধ করে, ইনফ্লামেশন কমায় এবং প্ল্যাক প্রতিরোধ করে। কিন্তু স্ট্যাটিনের আছে ভয়াবহ সব পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া, যেমনÑযকৃতের এনজাইমের অতিমাত্রায় বৃদ্ধি করা, মাংসপেশিকে ক্ষতিগ্রস্ত করা ইত্যাদি। অন্যদিকে ম্যাগনিজিয়াম মাংসপেশিকে সংরক্ষণ করে এবং এর মাত্রা বেশি হলে বদহজম থেকে ডায়রিয়া বা পেট খারাপ হয় বলে রক্তে এর মাত্রা বেশি হওয়ার সম্ভাবনা অপেক্ষাকৃত কম।
সমস্যা হচ্ছে হাইপোম্যাগনিজিমিয়া বা শরীরে ম্যাগনিজিয়ামের স্বল্পতা প্রায়ই অলক্ষে থেকে যায়। কারণ, খুব কম চিকিৎসক ম্যাগনিজিয়ামের অভাবজনিত ক্লিনিক্যাল উপসর্গগুলো সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। এমনকি ডাইইউরেটিক ওষুধ সেবন করেন এমন রোগীর শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া খনিজ লবণ প্রতিস্থাপন করতে চিকিৎসকগণ পটাশিয়াম খেতে পরামর্শ দেন কিন্তু ম্যাগনিজিয়াম দেন না। অথচ পটাশিয়ামের মতো ম্যাগনিজিয়ামও শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। গড়ে ৫০ শতাংশ মানুষই এই মিনারেলটি পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে ব্যর্থ হয়, যা একজন পুরুষের দৈনিক ৪০০ থেকে ৪২০ মিলিগ্রাম এবং একজন মহিলার ৩১০ থেকে ৩২০ মিলিগ্রাম পরিমাণ খাবারের মাধ্যমে গ্রহণ করা উচিত। গোটা খাদ্যশস্য, সিম ও ডাল জাতীয় শস্য, বাদাম ও বীজশস্য এবং সবুজ শাক-সবজিতে এটি প্রচুর পরিমাণে থাকলেও বিভিন্ন কারণে মানুষ এর অভাবে ভোগে।
মাটিতে ম্যাগনিজিয়ামের পরিমাণ কমে যাওয়া হাইপোম্যাগনিজিমিয়া-এর একটি অন্যতম কারণ। কিছুদিন আগে পর্যন্ত ম্যাগনিজিয়াম যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তা যে মাটি থেকে ধীরে ধীরে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে, তা মানুষের জানাই ছিল না। যার কারণে ফুরিয়ে যাওয়া মিনারেলটি প্রতিস্থাপন করা হয়নি অর্থাৎ মাটিতে সারের সাথে ম্যাগনিজিয়াম দেয়া হয়নি। এর ফলে, অতি-সম্প্রতি কিছু গবেষণায় দেখা যায়, খাদ্যে এর পরিমাণ অভাবনীয়ভাবে কম এবং উন্নত বিশ্বে দুই-তৃতীয়াংশ মানুষই প্রয়োজনীয় পরিমাণ ম্যাগনিজিয়াম গ্রহণ করেন না। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে এ রকম কোনো স্টাডি আমাদের হাতে নেই।
খাদ্য প্রক্রিয়াজাত করার সময়ও অনেক ম্যাগনিজিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। যেমনÑরিফাইন্ড শস্যে গোটা শস্যের মাত্র ১৬ শতাংশ ম্যাগনিজিয়াম থাকে। শারীরিক ও মানসিক স্ট্রেসও শরীরের ম্যাগনিজিয়াম নিঃশেষ করে ফেলে। স্ট্রেস হরমোন কর্টিসল বেড়ে গেলে শরীর থেকে ম্যাগনিজিয়াম কমে যায়। কারণ, স্ট্রেস প্রতিক্রিয়াটি তৈরি করবার জন্য ম্যাগনিজিয়াম প্রয়োজন। অনেক ওষুধ আছে, যা গ্রহণ করলে ম্যাগনিজিয়াম কমে যায়, যেমনÑ অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার-অ্যাকটিভিটি ডিজিজে ব্যবহৃত কিছু ওষুধ। একইভাবে অ্যালকোহোল, ক্যাফেইন বা কোমল পানীয়ের প্রভাবেও ম্যাগনিজিয়াম নিঃশেষিত হয়। এ ছাড়া শরীরের অতিরিক্ত চিনি কিডনির মাধ্যমে ম্যাগনিজিয়াম শরীর থেকে বের করে দেয়।
আগেই বলেছি ম্যাগনিজিয়ামের কার্য পরিসীমা বিশাল। এর অভাবে অ্যাথ্যারোসক্লেরোসিস, উচ্চ রক্তচাপ, টাইপ-২ ডায়াবেটিস, স্থূলতা, অস্টিওপোরোসিস এবং কিছু ক্যানসার হতে দেখা যায়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, শরীরে এর ঘাটতি পরীক্ষাগারে নির্ণয় করা একটি কঠিন কাজ। কেননা শরীরের ম্যাগনিজিয়ামের অধিকাংশই সঞ্চিত থাকে অস্থিতে ও অন্যান্য কোমল টিস্যুতে। শুধু ১% থাকে রক্তে। সবসময় রক্তে ম্যাগনিজিয়ামের নির্দিষ্ট মাত্রা বজায় রাখতে হাড় থেকে ম্যাগনিজিয়াম রক্তে আসে, এখন হাড়ে ম্যাগনিজিয়ামের মজুদ যত কমই থাকুক না কেন, যখনই রক্তে এর মাত্রা কমে যাবে তখনই হাড় থেকে ম্যাগনিজিয়াম রক্তে এসে একটি উপযুক্ত মাত্রা বজায় রাখবে। অর্থাৎ রক্তে ম্যাগনিজিয়ামের মাত্রা দেখে আমাদের বোঝার উপায় নেই যে হারে এর মাত্রা কম না বেশি।
তাই কিছু লক্ষণ দেখে ধরে নেয়া হয় যে ম্যাগনিজিয়ামের অভাব হতে পারে। সেগুলো হলোÑঅবসাদ, ঘুম না হওয়া, বিরক্তিভাব, কনস্টিপেশন। এই প্রাথমিক লক্ষণগুলো আবার ম্যাগনিজিয়ামের অভাব ছাড়া অন্য কোনো সমস্যার কারণেও হতে পারে। ফলে বোঝার উপায় থাকে না যে এটি ম্যাগনিজিয়ামের অভাব কি না। তবে একটা পর্যায়ে গিয়ে এর অভাবে কিছু স্পষ্ট লক্ষণ দেখা যায়, যেমনÑমাংসপেশি টেনে ধরা, হঠাৎ ভীষণ ব্যথা অনুভব করা, হাত বা পা অবশ হয়ে আসা, চোখের পেশি কাঁপা ইত্যাদি। তবে একদম খারাপ পর্যায়ে রোগীর সংজ্ঞা হারানো, ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন বা অনিয়মিত হৃদকম্পন হতে দেখা যায়।
এখন এর অভাবে ভুগলে আমরা কী করব? ম্যাগনিজিয়াম-সমৃদ্ধ খাবার খাব নাকি সাপ্লিমেন্ট খাব। এটা ঠিক যে, সাপ্লিমেন্ট একবারে অনেক ম্যাগনিজিয়াম দিবে, কিন্তু খাবারের মাধ্যমে অভাব পূরণ করা সবসময় উৎকৃষ্ট উপায়। কারণ, এর ক্ষতিকর পার্শ¦প্রতিক্রিয়া থাকে না। আমাদের শরীর যে পথে খাবার থেকে ম্যাগনিজিয়াম গ্রহণ করে সে পথে সাপ্লিমেন্ট থেকে ম্যাগনিজিয়াম গ্রহণ করে না। তাই সাপ্লিমেন্ট থেকে ম্যাগনিজিয়াম গ্রহণ করলে রক্তে একসাথে অতিমাত্রার ম্যাগনিজিয়ামের আধিক্য ঘটার সম্ভাবনা থাকে। অতিমাত্রায় ম্যাগনিজিয়াম থেকে নিম্ন রক্তচাপ, ঝিমানি, পেশি দুর্বল হওয়া, শ্বাসক্রিয়া মন্থর হওয়া বা একপর্যায়ে মৃত্যুও ঘটতে পারে। শরীর তার নিজস্ব ম্যাকানিজম দিয়ে খাবারের মাধ্যমে গৃহীত ম্যাগনিজিয়ামের আধিক্যকে প্রতিরোধ করতে পারে। তাই এ ক্ষেত্রে আধিক্য ঘটার সম্ভাবনা থাকে না। যদি খুব প্রয়োজন হয় তবে ডাক্তারের পরামর্শে খেতে হবে।
প্রাকৃতিক খাবার সবসময়ই অপেক্ষাকৃত নিরাপদ। শুধু এক কাপ পুঁই শাক বা পালং শাক থেকে আমরা ১৫৭ মিলিগ্রাম ম্যাগনিজিয়াম এবং এক কাপ সিমের বীজ থেকে ১১৩ মিলিগ্রাম ম্যাগনিজিয়াম পেতে পারি। এ ছাড়া সকল সবুজ শাক, বাদাম ও খাদ্যশস্য ও মাছে বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছে ম্যাগনিজিয়াম আছে।
আনসাং হিরো ‘ম্যাগনিজিয়াম’
ম্যাগনিজিয়াম শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ইলেকট্রোলাইট অর্থাৎ এটি রক্তে থাকাকালীন কিছু ইলেকট্রিক চার্জ বহন করে। বেশির ভাগ ম্যাগনিজিয়ামই অস্থিতে সঞ্চিত থাকে। এই মিনারেলটি আমাদের শরীরে ৩২৫টির বেশি বায়োকেমিক্যাল রিঅ্যাকশনের সাথে জড়িত, যেখানে এটি মূলত এনজাইমের কো-ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। এর অভাব হৃদকম্পন থেকে শুরু করে মাংসপেশি পর্যন্ত প্রতিটি জায়গায় এমনকি হরমোনের কাজে পর্যন্ত প্রভাব ফেলে। আমেরিকান কলিজ অব নিউট্রিশন-এর জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্র দাবি করে স্ট্যাটিন সেবন এবং রক্তে ম্যাগনিজিয়ামের স্বাভাবিক মাত্রায় উপস্থিতি উভয়ে একই রকম রক্ত জমাট বাঁধা রোধ করে, ইনফ্লামেশন কমায় এবং প্ল্যাক প্রতিরোধ করে। কিন্তু স্ট্যাটিনের আছে ভয়াবহ সব পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া, যেমনÑযকৃতের এনজাইমের অতিমাত্রায় বৃদ্ধি করা, মাংসপেশিকে ক্ষতিগ্রস্ত করা ইত্যাদি। অন্যদিকে ম্যাগনিজিয়াম মাংসপেশিকে সংরক্ষণ করে এবং এর মাত্রা বেশি হলে বদহজম থেকে ডায়রিয়া বা পেট খারাপ হয় বলে রক্তে এর মাত্রা বেশি হওয়ার সম্ভাবনা অপেক্ষাকৃত কম।
সমস্যা হচ্ছে হাইপোম্যাগনিজিমিয়া বা শরীরে ম্যাগনিজিয়ামের স্বল্পতা প্রায়ই অলক্ষে থেকে যায়। কারণ, খুব কম চিকিৎসক ম্যাগনিজিয়ামের অভাবজনিত ক্লিনিক্যাল উপসর্গগুলো সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। এমনকি ডাইইউরেটিক ওষুধ সেবন করেন এমন রোগীর শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া খনিজ লবণ প্রতিস্থাপন করতে চিকিৎসকগণ পটাশিয়াম খেতে পরামর্শ দেন কিন্তু ম্যাগনিজিয়াম দেন না। অথচ পটাশিয়ামের মতো ম্যাগনিজিয়ামও শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। গড়ে ৫০ শতাংশ মানুষই এই মিনারেলটি পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে ব্যর্থ হয়, যা একজন পুরুষের দৈনিক ৪০০ থেকে ৪২০ মিলিগ্রাম এবং একজন মহিলার ৩১০ থেকে ৩২০ মিলিগ্রাম পরিমাণ খাবারের মাধ্যমে গ্রহণ করা উচিত। গোটা খাদ্যশস্য, সিম ও ডাল জাতীয় শস্য, বাদাম ও বীজশস্য এবং সবুজ শাক-সবজিতে এটি প্রচুর পরিমাণে থাকলেও বিভিন্ন কারণে মানুষ এর অভাবে ভোগে।
মাটিতে ম্যাগনিজিয়ামের পরিমাণ কমে যাওয়া হাইপোম্যাগনিজিমিয়া-এর একটি অন্যতম কারণ। কিছুদিন আগে পর্যন্ত ম্যাগনিজিয়াম যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তা যে মাটি থেকে ধীরে ধীরে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে, তা মানুষের জানাই ছিল না। যার কারণে ফুরিয়ে যাওয়া মিনারেলটি প্রতিস্থাপন করা হয়নি অর্থাৎ মাটিতে সারের সাথে ম্যাগনিজিয়াম দেয়া হয়নি। এর ফলে, অতি-সম্প্রতি কিছু গবেষণায় দেখা যায়, খাদ্যে এর পরিমাণ অভাবনীয়ভাবে কম এবং উন্নত বিশ্বে দুই-তৃতীয়াংশ মানুষই প্রয়োজনীয় পরিমাণ ম্যাগনিজিয়াম গ্রহণ করেন না। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে এ রকম কোনো স্টাডি আমাদের হাতে নেই।
খাদ্য প্রক্রিয়াজাত করার সময়ও অনেক ম্যাগনিজিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। যেমনÑরিফাইন্ড শস্যে গোটা শস্যের মাত্র ১৬ শতাংশ ম্যাগনিজিয়াম থাকে। শারীরিক ও মানসিক স্ট্রেসও শরীরের ম্যাগনিজিয়াম নিঃশেষ করে ফেলে। স্ট্রেস হরমোন কর্টিসল বেড়ে গেলে শরীর থেকে ম্যাগনিজিয়াম কমে যায়। কারণ, স্ট্রেস প্রতিক্রিয়াটি তৈরি করবার জন্য ম্যাগনিজিয়াম প্রয়োজন। অনেক ওষুধ আছে, যা গ্রহণ করলে ম্যাগনিজিয়াম কমে যায়, যেমনÑ অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার-অ্যাকটিভিটি ডিজিজে ব্যবহৃত কিছু ওষুধ। একইভাবে অ্যালকোহোল, ক্যাফেইন বা কোমল পানীয়ের প্রভাবেও ম্যাগনিজিয়াম নিঃশেষিত হয়। এ ছাড়া শরীরের অতিরিক্ত চিনি কিডনির মাধ্যমে ম্যাগনিজিয়াম শরীর থেকে বের করে দেয়।
আগেই বলেছি ম্যাগনিজিয়ামের কার্য পরিসীমা বিশাল। এর অভাবে অ্যাথ্যারোসক্লেরোসিস, উচ্চ রক্তচাপ, টাইপ-২ ডায়াবেটিস, স্থূলতা, অস্টিওপোরোসিস এবং কিছু ক্যানসার হতে দেখা যায়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, শরীরে এর ঘাটতি পরীক্ষাগারে নির্ণয় করা একটি কঠিন কাজ। কেননা শরীরের ম্যাগনিজিয়ামের অধিকাংশই সঞ্চিত থাকে অস্থিতে ও অন্যান্য কোমল টিস্যুতে। শুধু ১% থাকে রক্তে। সবসময় রক্তে ম্যাগনিজিয়ামের নির্দিষ্ট মাত্রা বজায় রাখতে হাড় থেকে ম্যাগনিজিয়াম রক্তে আসে, এখন হাড়ে ম্যাগনিজিয়ামের মজুদ যত কমই থাকুক না কেন, যখনই রক্তে এর মাত্রা কমে যাবে তখনই হাড় থেকে ম্যাগনিজিয়াম রক্তে এসে একটি উপযুক্ত মাত্রা বজায় রাখবে। অর্থাৎ রক্তে ম্যাগনিজিয়ামের মাত্রা দেখে আমাদের বোঝার উপায় নেই যে হারে এর মাত্রা কম না বেশি।
তাই কিছু লক্ষণ দেখে ধরে নেয়া হয় যে ম্যাগনিজিয়ামের অভাব হতে পারে। সেগুলো হলোÑঅবসাদ, ঘুম না হওয়া, বিরক্তিভাব, কনস্টিপেশন। এই প্রাথমিক লক্ষণগুলো আবার ম্যাগনিজিয়ামের অভাব ছাড়া অন্য কোনো সমস্যার কারণেও হতে পারে। ফলে বোঝার উপায় থাকে না যে এটি ম্যাগনিজিয়ামের অভাব কি না। তবে একটা পর্যায়ে গিয়ে এর অভাবে কিছু স্পষ্ট লক্ষণ দেখা যায়, যেমনÑমাংসপেশি টেনে ধরা, হঠাৎ ভীষণ ব্যথা অনুভব করা, হাত বা পা অবশ হয়ে আসা, চোখের পেশি কাঁপা ইত্যাদি। তবে একদম খারাপ পর্যায়ে রোগীর সংজ্ঞা হারানো, ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন বা অনিয়মিত হৃদকম্পন হতে দেখা যায়।
এখন এর অভাবে ভুগলে আমরা কী করব? ম্যাগনিজিয়াম-সমৃদ্ধ খাবার খাব নাকি সাপ্লিমেন্ট খাব। এটা ঠিক যে, সাপ্লিমেন্ট একবারে অনেক ম্যাগনিজিয়াম দিবে, কিন্তু খাবারের মাধ্যমে অভাব পূরণ করা সবসময় উৎকৃষ্ট উপায়। কারণ, এর ক্ষতিকর পার্শ¦প্রতিক্রিয়া থাকে না। আমাদের শরীর যে পথে খাবার থেকে ম্যাগনিজিয়াম গ্রহণ করে সে পথে সাপ্লিমেন্ট থেকে ম্যাগনিজিয়াম গ্রহণ করে না। তাই সাপ্লিমেন্ট থেকে ম্যাগনিজিয়াম গ্রহণ করলে রক্তে একসাথে অতিমাত্রার ম্যাগনিজিয়ামের আধিক্য ঘটার সম্ভাবনা থাকে। অতিমাত্রায় ম্যাগনিজিয়াম থেকে নিম্ন রক্তচাপ, ঝিমানি, পেশি দুর্বল হওয়া, শ্বাসক্রিয়া মন্থর হওয়া বা একপর্যায়ে মৃত্যুও ঘটতে পারে। শরীর তার নিজস্ব ম্যাকানিজম দিয়ে খাবারের মাধ্যমে গৃহীত ম্যাগনিজিয়ামের আধিক্যকে প্রতিরোধ করতে পারে। তাই এ ক্ষেত্রে আধিক্য ঘটার সম্ভাবনা থাকে না। যদি খুব প্রয়োজন হয় তবে ডাক্তারের পরামর্শে খেতে হবে।
প্রাকৃতিক খাবার সবসময়ই অপেক্ষাকৃত নিরাপদ। শুধু এক কাপ পুঁই শাক বা পালং শাক থেকে আমরা ১৫৭ মিলিগ্রাম ম্যাগনিজিয়াম এবং এক কাপ সিমের বীজ থেকে ১১৩ মিলিগ্রাম ম্যাগনিজিয়াম পেতে পারি। এ ছাড়া সকল সবুজ শাক, বাদাম ও খাদ্যশস্য ও মাছে বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছে ম্যাগনিজিয়াম আছে।